বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

অনলাইনে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট-এর জন্য আবেদনঃ কিছু অলিখিত নিয়ম

(এই পোস্ট বেশ পুরাতন। তৎকালীন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এখানে আমার যেসব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছি বর্তমানের সাথে তার মিল না-ও থাকতে পারে।)

অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার বিস্তারিত নিয়মাবলী passport.gov.bd সাইটে  "Online MRP Instruction" ডাউনলোড করে দেখে নিতে হবে।

এইসব নিয়মাবলী'র বাইরেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যেগুলো ঠিক না থাকলে আপনার আবেদন-পত্র প্রাথমিক যাচাই-এর সময়েই বাতিল হয়ে যাবে।
হয়তো দেখা যাবে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর আবেদনপত্রের ছোট্ট একটা ভুলের কারণে আপনাকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে প্রাথমিক যাচাই-'ডেস্ক' থেকেই। এরকম কিছু অলিখিত নিয়ম এবং পাসপোর্ট পূরণ ও জমাদান- সংক্রান্ত কিছু সাধারণ ভুল নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

 ১) অনেকে মনে করেন ফটোকপি'র সাথে মূল কাগজ নিয়ে গিয়ে দেখালেই চলবে- ফটোকপি-গুলো সত্যায়িত করাতে হবে না... এটা ভূল ধারণা। যেসব ডকুমেন্ট-এর ফটোকপি জমা দিচ্ছেন সেগুলো অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে। যে সকল ব্যাক্তিবর্গ পাসপোর্টের আবেদনপত্র, ছবি এবং এ-সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্র সত্যায়িত করতে পারবেন তাদের তালিকা আবেদনপত্রের চতুর্থ-পাতার সাধারণ নির্দেশনা (Generel Instruction) -এর ৪ নং-এ দেয়া আছে।

 ২) আবেদনপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় যেসব ডকুমেন্ট জমা দিবেন, যেমনঃ জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত/পেশাগত যোগ্যতার সনদ, পূর্ববর্তী পাসপোর্ট (যদি থাকে) , এগুলোর ফটোকপি'র পাশাপাশি অবশ্যই মূল-কপি সাথে নিয়ে যেতে হবে

 ৩) জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই নতুন 'অনলাইন' পদ্ধতি'র হতে হবে যাতে স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা উভয়টিই উল্লেখ থাকবে। এই 'অনলাইন জন্ম-নিবন্ধন' সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদ - ইত্যাদি কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

 ৪) আবেদনপত্রে উল্লেখিত আপনার নাম, বাবা-মায়ের নাম, জন্ম তারিখ, বর্তমান ঠিকানা এগুলো আপনার জন্ম নিবন্ধন/জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখিত নাম, বাবা-মায়ের নাম, জন্ম তারিখ, বর্তমান ঠিকানার অনুরূপ হতে হবে। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধনে উল্লেখিত বর্তমান-ঠিকানা'র সাথে যদি আপনার আবেদনপত্রে উল্লেখিত বর্তমান-ঠিকানা না মিলে সেক্ষেত্রে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না।

 ৫) যারা আবেদনপত্রে পেশা হিসেবে PRIVATE SERVICE-উল্লেখ করবেন তাদের কর্মস্থল থেকে প্রত্যায়ন-পত্র এবং পরিচয়পত্র (ID-Card) (মূল+ফটোকপি) সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অন্যান্য পেশা যেমন ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার উল্লেখ করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ-ও সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।

 ৬) আবেদনপত্রের ১ নম্বর ঘর ব্যাতীত অন্য সব ঘর ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে। বিশেষ করে ২৫ নম্বর ঘরে (Payment Information)অনেকেই বাংলায় লিখে ফেলেন, সেক্ষেত্রে আবেদন যাচাইকারী ঝামেলা করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় আগে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিয়ে তারপর অনলাইনে আবেদন করলে, সেক্ষেত্রে Payment Information অনলাইনে আবেদন করার সময়েই পূরণ করে দেয়া যাবে।

 ৭) ব্যাঙ্কে টাকা দেয়ার সময় পে-স্লিপে আপনার নাম লিখতে হবে, এক্ষেত্রে পে-স্লিপ-এর নামের বানান পাসপোর্টে লিখা নামের বানানের সাথে না মিললেও ঝামেলা হবে।



 ২ এবং ৫ নম্বর বিষয়গুলোতে ভূল হলে সমস্যা না-ও হতে পারে, হয়তো কর্তব্যরত যাচাইকারী এই বিষয়গুলো গুরুত্ব না-ও দিতে পারেন।  কিন্তু কর্তব্যরত যাচাইকারী'র  যদি আপনার চেহারা পছন্দ না হয় বা বাসা থেকে বউয়ের সাথে ঝগড়া করে আসার কারণে তার মেজাজ খারাপ থাকে সেক্ষেত্রে ঝামেলা হতে পারে, তাই কোন রিস্ক না নেওয়াই ভালো।

** উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো কোন 'অফিসিয়াল' নিয়ম না, আমি নিজের এবং আশপাশের মানুষের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী লিখেছি। কেউ এগুলো অনুসরন করলে কোন সমস্যা হবে না, বরং অনুসরন না করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

** এ ধরনের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট কারও জানা থাকলে কমেন্টে লিখে দিলে ভালো হয়।