বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১১

একা থাকার ব্যাথা

একা থাকার ব্যাথায়,
হৃদয় চুপসে যায়,
রাত-দিন খোঁজে মন
জানি না কারে যে হায়।

স্বর্ণালী এ সময়
হয়ে যায় অপচয়,
একাকীত্বের জ্বালা
আর বল কত সয়?

শত বিনিদ্র রাত
নিঃসঙ্গ সাঁঝ, প্রাত,
ঝিমিয়ে পড়া দুপুর,
বর্ষায় বারিপাত,
চাঁদের অযথা ওঠা,
অহেতুক ফুল ফোঁটা,
আমারে ব্যাঙ্গ করে
নদীর সাগরে ছোটা,
তারাদের নিভে জ্বলা,
পাখিদের উড়ে চলা,
মেঘে আঁকা সূর্যের
আলোর শিল্পকলা,
প্রকৃতির প্রতিক্ষণ
এতো সব আয়োজন,
তারপরও কী অভাবে
হাহাকার করে মন?

ঘন ঘোর বর্ষায়,
শীতে রাতে কুয়াশায়
পথে পথে ঘোরে মন
অলীক সুখের আশায়।

শুষ্ক তৃষিত মন
চায় শুধু প্রতিক্ষণ
কারও প্রেমে রাঙ্গাতে
বিবর্ণ এ জীবন।
বিষন্ন এই মনে
আকাংক্ষা কারও সনে
জড়িয়ে আনবো সুখ
নিঃসঙ্গ এ জীবনে।

আমি কোন যন্ত্র না,
পাথর এই মন তো না,
একাকীত্বের এই
সয়ে যাব যন্ত্রণা।

দুঃসহ এ সময়
কেন এত ধীরে বয়?
জীবন কি হবে কভূ
কিঞ্চিত প্রেমময়?

-----------------------------

কাকতালীয় কিনা জানি না, একাকীত্বের "জ্বালা" থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রার্থনারূপী এই ছড়া লিখে ফেসবুকে প্রকাশ করার মাসখানেকের মধ্যেই আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।

মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

সড়কে মড়ক


"মরিতে চাহি না আমি"
নিষ্ঠুর সড়কে,
"বাঁচিবারে চাই"
এই "নন্দিত নরকে"।
সড়ক তো নয় সব
 বধ্যভূমি যেন,
মরে যাব ক্ষোভ নেই
কিন্তু এভাবে কেন?

আমার ছিন্ন দেহ
করবে রে জড়ো  কে,
দেবেই বা গোর কে
কাফনের মোড়কে?

বিভাজক থাকা চাই
প্রতি মহাসড়কে,
তা না হলে সারা দেশ
ছেয়ে যাবে মড়কে।

অদক্ষ চালকেরা যতই
চালাবে গাড়ি,
স্বজন হারানোর এই
চলবেই আহাজারি।

যাকে তাকে যে বসায়
চালকের আসনে
তাড়াতাড়ি তারে দাও
বনে নির্বাসনে।

সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০১১

বিকৃত/বিক্রীত সুখ

    -মরনানন্দ দে
      অধুমপায়ীরে ডাকি করিয়া বড়াই,
 ধুমপায়ী কহে, "আমি তোরে কি ডরাই?"
     তুই ব্যাটা কি বুঝিস্‌ জীবনের মানে,
  আমি জানি কি যে সুখ প্রতি সুখ-টানে।"
     একবুক ধোঁয়া টানি কহে ফের হাসি,
 "আমি না জীবনটাকে বড় ভালবাসি।"

    অধুমপায়ী বেচারা দিয়া মৃদু সায়,
 নাসিকা চাপিয়া কহে,"সন্দেহ কি তায়!
    বড় ভাল অভ্যাস, একদম খাসা,
      যদিও ফলাফল মহা সর্বনাশা।
    দয়া করে মরো গিয়ে নির্জন স্থানে,
  আমারে করোনা সাথী এই বিষপানে।"

বুধবার, ১ জুন, ২০১১

সুখের জীবন

--কমন রায়
অবিবাহিত জন,
ভ্রমে কি কখন,
বিবাহ বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা বিয়ে,
বুঝিবে সে কি- এ,
কেহ পরিণয়ে বাঁধেনি যারে?



২1

Twenty-First ফেব্রুয়ারির রাতে
Paper এবং Pen-টা নিয়ে হাতে,
একটি Word-ও English না লিখে,
লিখব Tonight এই কবিতাটিকে-
-এই ছিল Just আমার মনের আশা,
যদিও আমার ভাষাজ্ঞান ভাসা-ভাসা।
But কোন-How পারি নাই Check দিতে,
English এসে ঢুকলো Bengali-তে।

আরিফ-বন্দনা

--- রং আনসার খান


যদিও সে দাবী করে
আবেগে সে অন্ধ*,
ভাব-এ তাঁর নাই কোন
আবেগের গন্ধ।


চুপচাপ থাকে সদা
তবু প্রাণবন্ত,
কী আচার-ব্যবহার!
যেন সাধু-সন্ত।


বোকা-বোকা ভাব তাঁর
যদিও বুদ্ধিমান,
চোখের পলকে করে
Problem সমাধান।


সারাক্ষণ চলে তাঁর
মগজে অনুরণন,
চিন্তা ভাবনা করে
মেপে মেপে কথা কন্‌।


আর কত তেল দিব
দোষ ত্রুটি লুকিয়ে,
আমার এ তেলের খনি
গেল প্রায় শুকিয়ে।

("একজন দুর্বল মানুষ"-এর লেখকের) একজন দুর্বল ছাত্র

--- পি. সি. সরকার


সাবজেক্ট CSE
কেন হায় নিয়েছি!
মেধা যা-ও ছিলো কিছু,
সমূলে হারিয়েছি।
সারারাত PC নিয়ে
বসে থেকে, নিয়মিত
দেরি করে ক্লাসে গিয়ে
হই শুধু বিতাড়িত।
পড়ায় ছিল না মন,
বই ছিল দুশমন,
বই থেকে দূরে থাকা
-এই ছিল বিনোদন।


C যে বড় শক্ত,
পানি করে রক্ত
তা-ও পাশ করেছি,
টেনে-টুনে পেয়ে 'C'।
এরপর OOP-তে
কিছুটা দখল নিতে
রাত-দিন পড়লাম
স্বভাবের বিপরীতে।
কাজ হলো না-তো তা-ও,
শ্রমটুকু গেল ফাউ,
Java-তে C-গ্রেড পাই,
যেই কদু সেই লাউ।
কোর্স Algorithm
সোজা নয় একদম,
বুঝতে Procedure
বের হয়ে যায় দম।


Circuit থিওরি ও
Semi Conductor,
কোর্স যেন নয়
আমারে পিষে গেল ট্রাক্টর।
Data Comm. বুঝি কম,
তবু কিছু শিখেছি,
পরীক্ষা দিতে গিয়ে
বেশ কিছু লিখেছি।
Software E.'র কোর্স
ভয়ানক জঘন্য,
অবধারিতভাবে
গ্রেড পাই নগন্য।
Database কোর্সটাতে
মজা ছিল Query,
কিন্তু এছাড়া বাকী
সব ছিল ভয়ের-ই।
Networking যেন
e-জালের ইতিহাস,
যত পড়ি তত হয়
পিছনের স্মৃতিহ্রাস।
Finite Automata
গায়ে যেন দিলো কাঁটা,
TC- তে C পেয়ে ফের
চুকিয়েছি ঝামেলা-টা।
শেষে এল এইবার
Optics Fiber,
পাশ করে মনে হল
পেরুলাম খাইবার।


*Theory-তে ভালো নই,
Lab-e যেন ভালো হই,
দূর করি বাজে কাজ ঝেটিয়ে।
চেয়ারেতে রাত দিন,
বসে করি প্রোগ্রামিং,
করি Code Key-board-টা পিটিয়ে।*


Brain গেছে গোল্লায়,
Lab-এ তাই অসহায়,
Program লিখে যতবার-ই Run চেপেছি,
Hang করেছে PC ।
কোন কোড আজো হায়
Accept হলো না,
-UVA বাজে Site,
ভুলেও তা খুলো না!
Circuit Lab-এ আর
সেমি কন্ডাক্টার,
IC জ্বালিয়ে কত
করেছি যে ছারখার!


এইভাবে সব কোর্স
কোনমতে করে পাশ,
অবশেষে ছাড়লাম
ভার্সিটি ক্যাম্পাস।
এখনও তো মনে হয়
আমি ভালো আছি ভাই,
যদিও এখনো আমি
চাকরিটা পাই নাই।
পেয়ে যাব নিশ্চয়ই,
মনে নাই সংশয়,
আশা আছে CSE'র
Job Field ছোট নয়।


ধারের আঁধার

-- ঋণক্ষান্ত দে

ধার দেয়ার এ ধারায়
কত টাকা যে হারায়,
টাকা হারানোর ব্যাথা
ফুটে উঠে চেহারায়।


সব ব্যাথা তবু সয়,
টাকা মারা, কভূ নয়!
বন্ধু শত্রু হয়,
ভালবাসা ক্ষয় হয়,
আর কিছু যায় যাক,
এ আমার বড় ভয়।


এ ধারের ধারা লয়
হয়ে যাবে নিশ্চয়ই।


ধার দেয়া ভাল নয়,
এ ধারার লোপ হয়
(বা) ধারা বিপরীতে বয়
- এ-ই মোর মনে কয়।


মনে আজ সংশয়।
কর যত অনুনয়,
ধার দেয়া আর নয়,
ভেঙ্গে মোর সঞ্চয়।


ধারের ধারি না ধার,
-মেনে এই সংস্কার,
এসো সবে গড়ে তুলি
শান্তির সংসার।
.
.
.
অবশেষে আবদার,
কিছু টাকা চাই ধার,
ছাপাতে একটা বই
এ জাতীয় কবিতার।


পাওনাদারের আর্তনাদ

--ঋণক্ষান্ত দে

চারটি হাজার টাকা গুনে-গুনে,
দিয়েছিনু, ওহে, আছে কি স্মরণে?
চাইতে পারিনি লাজের কারণে,
তাই বলে তা-কি পাব-না জীবনে?
আমার তো ভাই, পড়ে না-রে মনে,
কভূ শত্রুতা ছিলো তব সনে।
আমার মতো এ চিরদুঃখী জনে,
ধোঁকা দিবে তুমি? এই ছিলো মনে!
টাকা না থাকাটা প্রতি ক্ষণে ক্ষণে,
দিতেছে যাতনা ঘুমে জাগরণে,
কী করিয়া আজি বাঁচি টাকা বিনে,
দয়া কর মোরে এই দূর্দিনে।